নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের অস্থিতিশীলতা রোধ করতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামক একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো, যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। এ বিষয়ে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
নাসিমুল গনি জানান, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ মূলত একটি যৌথ অভিযান, যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে পুলিশ বাহিনী এবং সহযোগিতায় রয়েছে সেনাবাহিনী। এই অভিযানের লক্ষ্য হলো, যারা দেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে চায়, তাদের আটক করে আইনের আওতায় আনা। বিশেষত, যারা জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, গত ছয় মাসে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে সরকার পতনের পর, দেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এর ফলে, পুলিশের মধ্যে অনেক সদস্যের মানসিক ও নৈতিক ক্ষতি হয়েছে। অনেক থানা আক্রান্ত হয়েছে এবং পুলিশ বাহিনী অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার নতুন আইন প্রয়োগ কৌশল অবলম্বন করছে এবং ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সেই কৌশলের একটি অংশ।
স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি জানিয়েছেন, এই অপারেশন চলাকালে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে এবং তাদের ব্রিফিংও সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, আইনের স্পিরিট অনুসরণ করে এবং মানবাধিকার ও পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে আইনের অপব্যবহার না হয় এবং একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।
নাসিমুল গনি বলেন, “এই অভিযানে আমরা শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের জন্য নয়, বরং মানবাধিকার এবং পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করতে চাই।” তিনি আরও জানান, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি একটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে, যাতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মানবাধিকার এবং পরিবেশের প্রতি আরো সচেতন হয়ে কাজ করতে পারে।
এছাড়া, পুলিশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “পুলিশ বাহিনীতে কিছু সদস্য অনৈতিক কাজ করেছেন এবং কিছু সদস্য পালিয়ে গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের লক্ষ্য পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করা, যাতে তারা তাদের কাজে আরও আত্মবিশ্বাসী ও নৈতিকভাবে দৃঢ় হতে পারে।”
অপারেশনটি চলমান থাকবে এবং দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারের দৃঢ় সংকল্প রয়েছে।