এছাড়া, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আরও উল্লেখ করেছে যে, দেশের সংসদীয় শুদ্ধতা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। কমিশন মনে করে, যদি নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে এমন ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া না হয়, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত বা তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে, তবে এটি দেশের জন্য একটি বড় বিপদ হতে পারে। কমিশন জানিয়েছে, “দেশের জনগণের রক্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে যদি এমন অপরাধীদের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।”
এই প্রসঙ্গে কমিশন আরও বলেছে যে, আইসিটি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন এবং ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করা প্রয়োজন, যাতে অপরাধীদেরকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা যায়। তারা সুপারিশ করেছে যে, আন্তর্জাতিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের সংসদ সদস্য হতে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত এবং তাদের ভোটার তালিকা থেকেও নাম বাদ দেওয়া উচিত।
এছাড়া, ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদেরও নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কমিশন আরও তীব্র সুপারিশ জানিয়েছে। কমিশন মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে তা দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ণ করবে।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সুপারিশগুলি বাস্তবায়ন হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং আইনানুগ শুদ্ধতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে। তবে তারা মনে করছেন, এটি সরকারের জন্য একটি জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ এটি শুধু রাজনৈতিক দলগুলোই নয়, তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক ব্যক্তির ভবিষ্যতকেও প্রভাবিত করবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার প্রস্তাবনায় আরও একধাপ এগিয়ে যেতে বলা হয়েছে, যেখানে পলাতক আসামিদেরও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। এতে করে যদি কেউ ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে দণ্ডিত হন এবং তিনি ফেরারি অবস্থায় থাকেন, তাহলে তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে না।
এছাড়া, কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এই মুহূর্তে দেশটির উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা চলমান, যেখানে দণ্ডিত ব্যক্তিরা সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন। কমিশনের মতে, সরকারের উচিত এসব মামলার রায় প্রাপ্তির আগেই নির্বাচন কমিশন এবং আদালতের সিদ্ধান্তে অপরাধীদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।”
এভাবে, দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্করণের জন্য কমিশনের সুপারিশগুলো দেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং শুদ্ধতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, এটি দেশের আইন, রাজনীতি এবং সমাজে গভীর প্রভাব ফেলবে, এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে পারে।