ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড পৌঁছানোর চেষ্টারত একটি অভিবাসীবাহী নৌকাডুবে আটজন মারা গেছেন।
পাস-ডি-ক্যালে অঞ্চলের প্রিফেক্ট জ্যাক বিলান্ট জানিয়েছেন, এ বছর এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের উপকূল থেকে চ্যানেল অতিক্রম করে ইংল্যান্ড পৌঁছাতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৪৬ এ পৌঁছেছে। এই মাসের শুরুর দিকেই নৌকাডুবিতে ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।
বিলান্ট বলেন, উদ্ধারকারী কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছিল যে ৫৯ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা পাস-ডি-ক্যালে এলাকার আব্লোতোস উপকলে দুর্দশায় পড়েছে।
আটজনের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্দশাগ্রস্ত নৌযানটি খুব দ্রুতই সংকটে পড়ে এবং পাথরের ওপর আছড়ে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। নৌকায় থাকা অপর ৫১ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা ইরিত্রিয়া, সুদান, সিরিয়া, মিশর, ইরান এবং আফগানিস্তান থেকে এসেছেন বলে জানিয়েছেন বিলান্ট।
বিলান্টের মতে, হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাস বয়সি এক শিশুসহ ছয়জনকে জরুরি অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সংকট চলমান প্রবল স্রোতের ফলে ইংলিশ চ্যানেল বেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে৷ ছোট নৌকাগুলো এর ফলে নিয়মিতই বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। তারপরেও নিজ দেশে যুদ্ধ বা দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা বহু মানুষ নিয়মিতই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিচ্ছেন।
বিলান্টের মতে, কেবল ১৪ সেপ্টেম্বরই ফ্রান্স থেকে চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার আটটি প্রচেষ্টা নেওয়া হয়।একদিনেই অন্তত ২০০ মানুষকে চ্যানেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের মতে, এই বছরের শুরু থেকে ২২ হাজারেরও বেশি অভিবাসী চ্যানেল পার হয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছেছেন৷ ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন সাবেক রক্ষণশীল সরকার নৌকা বন্ধ করুন স্লোগান পরিচিত করে তুলেছিল। নবনির্বাচিত লেবার সরকারও অভিবাসীদের চ্যানেল পারাপারে সহায়তা করা অপরাধী চক্রকে দমন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাত বা পর্যাপ্ত খাদ্য ও জল সরবরাহের অভাবে অসহনীয় পরিস্থিতিতে বসবাস করতে বাধ্য হওয়া লাখ লাখ মানুষের এই প্রচেষ্টা এত সহজে বন্ধ হবে না।
সমস্যার আংশিক সমাধান হিসেবে ব্রিটেনে অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আইনি ও নিরাপদ বিকল্প প্রস্তাব করার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।