রাজধানী ঢাকা উত্তরায় প্রকাশ্যে দুই তরুণ-তরুণীকে রামদা দিয়ে কোপানোর একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে, যা তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ, তারা হলেন মোবারক হোসেন (২৫) ও রবি রায় (২২)। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা নাগাদ উত্তরা-৭ নম্বর সেক্টরের একটি সড়কে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সাদা শার্ট পরিহিত ব্যক্তি রামদা দিয়ে প্রকাশ্যে তরুণ-তরুণীকে কোপাচ্ছে। আক্রমণের সময় ওই তরুণী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে হাত জোড় করে মাফ চাইতে দেখা যায়, তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসতে থাকে। এই ঘটনায় আহতরা স্বামী-স্ত্রী বলে জানা গেছে এবং তাদের এখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি, পুলিশ জানিয়েছে, পরে তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হবে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, এই ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি প্রাইভেট গাড়ির সাথে মোটরসাইকেলের কথাকাটির পর। মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে গড়ায় কথাবার্তা, এরপর গাড়ির ড্রাইভার এবং তার সঙ্গী রামদা বের করে মোটরসাইকেল আরোহীকে কোপাতে শুরু করেন। সংঘর্ষের সময় স্থানীয় জনগণ তা দেখে দ্রুত পরিস্থিতি সামলে ফেলে এবং হামলাকারী দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। যিনি রামদা দিয়ে কোপাচ্ছিলেন, তিনি ওই গাড়ির ড্রাইভার মোবারক হোসেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, মোবারক হোসেনের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী থানা এলাকায় এবং তিনি বর্তমানে টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায় ভাড়া থাকেন। অপর গ্রেপ্তার হওয়া রবি রায়ের বাড়ি টঙ্গী পশ্চিম থানার হাজীর মাজার এলাকায়। পুলিশ জানান, তারা আগে থেকেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন এবং এ ঘটনার পেছনে কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “এটি অত্যন্ত ঘৃণিত একটি অপরাধ। যারা কুপিয়েছে তারা সন্ত্রাসী, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে এবং বাকিদের আটকের জন্য আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আহত দম্পতিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। পুরো বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হবে।”
এ ঘটনায় উত্তরা এলাকায় ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা এই হামলার জন্য দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও ব্যক্তিদের ধরতে তৎপর রয়েছে।