বিশ্ববাজারে এক মাস পর জ্বালানি তেলের দাম ৪ শতাংশের বেশি কমেছে। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়া এবং বিশ্বব্যাপী তেলের চাহিদা দুর্বল হওয়ার আশঙ্কার কারণে এই দাম কমেছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩.৩৩ ডলার বা ৪.৫ শতাংশ কমে ৭০.৫০ ডলারে নেমে আসে। একই দিনে ব্রেন্ট ক্রুডের দামও ব্যারেলপ্রতি ৩.২৮ ডলার বা ৪.২ শতাংশ কমে ৭৪.১৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আগে, উভয় বেঞ্চমার্কের দাম অন্তত চার ডলার কমে যাওয়ায় এটি ছিল সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের তেল স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা না করার ঘোষণার পর মধ্যপ্রাচ্যে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কা কিছুটা কমেছে, ফলে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। এছাড়া, বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথগতি ও চাহিদা কমে যাওয়ার পূর্বাভাস তেলের বাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে। গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং ইরান-ইসরায়েল সম্পর্কের অস্থিরতার ফলে তেলের দাম অস্থির হয়ে উঠেছিল, কিন্তু ইসরায়েলের হামলা না করার সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ইউরোপ ও চীনের শিল্পখাতে উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে তেলের চাহিদা হ্রাস পাবে। এর ফলে তেলের দাম আরও নিম্নমুখী হতে পারে।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কতটা স্থিতিশীল হবে, তা ভবিষ্যতের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক প্রবণতার ওপর নির্ভর করবে। যদি বিশ্ব অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যায় এবং সরবরাহে বড় কোনো সংকট না ঘটে, তবে তেলের দাম আরও কমতে পারে। তবে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে বা বড় সরবরাহ সংকট দেখা দিলে তেলের দাম আবারও বাড়তে পারে।
তেলের দাম কমার এই পরিস্থিতি ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির হলেও, ওপেক (OPEC) সদস্য রাষ্ট্রগুলো নতুন করে উৎপাদন সীমিত করার পরিকল্পনা নিতে পারে, যা তেলের দাম আবারও বৃদ্ধি পেতে পারে।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ভবিষ্যতে বাজার পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হবে এবং তেলের দাম কিভাবে প্রভাবিত হবে, তা সময়ের সাথে পর্যালোচনা করা।