নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিনে গ্রেপ্তারের নাটক অনেক দেখেছি। একদল গ্রেপ্তার করে, আর দুইদিন পর বিচারকদের মাধ্যমে জামিন দিয়ে দেওয়া হয়। এই চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়িয়ে যেতে হবে।”
শনিবার গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ভাওয়াল রাজবাড়ী সড়কে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ তাদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করেছে, কিন্তু এখনো কিছু সন্ত্রাসী গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।”
শুক্রবার রাতে গাজীপুর নগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে সাতজন গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সারজিস আলম বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নিরীহ ছাত্রদের ওপর হামলা করছে, অথচ পুলিশ ঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি। এমনকি পুলিশ আড়াই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসার পরও সঠিক ব্যবস্থা নেয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এখন সময় এসেছে, যে বিচারকরা অপরাধীদের জামিন দেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, এই দুর্নীতিবাজ বিচারকদের অপসারণ করতে হবে।”
সারজিস আলম বলেন, “গাজীপুর থেকে এই বার্তা স্পষ্ট করে দেওয়া হলো: যদি প্রশাসন আমাদের সহ্য করার সীমা অতিক্রম করে, তবে পুরো বাংলাদেশে একটি নতুন বিপ্লব শুরু হবে। আমরা গাজীপুরে আসতে পারি, আবার প্রয়োজন হলে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারি।”
এ সময় তিনি পুলিশের ওপর সমালোচনা করে বলেন, “এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে, যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।”
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নাজমুল করীম খান হামলার ঘটনায় নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে ক্ষমা চান এবং বিষয়টির তদন্ত শুরু করতে সদর থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন।
সাদ্দাম হোসেন/