বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চাল। এরপর একমাস পেরিয়ে গেলেও কমেনি দাম। বরং নতুন করে চালের দাম বাড়ার শঙ্কার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে প্রধান এই খাদ্যপণ্যটির চড়া দাম নিয়ে দারুণ বিপাকে দেশের নাগরিকরা। তারা বলছেন, নতুন সরকার অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যেমন উদ্যোগ নিচ্ছে, চালের ক্ষেত্রেও তা প্রয়োজন। তারা বাজারে গিয়ে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাল ক্রেতা গণমাধ্যমকে বলেন, সংসারে প্রতিদিন দেড় কেজি চালের জন্য ১০০ টাকা লাগে। দাম কমছে না। এর মধ্যে ওএমএস বন্ধ। এখন আর তিনবেলা রান্না হয় না। এক কেজি চালে দিন পার করতে হয়। তিনি বলেন, ‘শাক-সবজি ও মুরগির দাম কমলো, কিন্তু চালের দাম তো আগে কমা দরকার। কারণ, ভাত না জুটলে এগুলা দিয়ে কী হবে?’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের কয়েক সপ্তাহের মতোই মোটা চালের কেজি ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে আবার অধিকাংশ দোকানেই মিলছে না মোটা জাতের চাল। যে কারণে অনেক ক্রেতাকে বাধ্য হয়ে মাঝারি মানের চাল কিনতে হচ্ছে। এদিকে, মাঝারি চাল বিআর-২৮ ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। পাশাপাশি মানভেদে সরু চালের কেজি ৭০ থেকে ৭৮ টাকা।
মাস দেড়েক আগেও মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ ও মাঝারি চালের কেজি ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর সরু চাল বিক্রি হতো কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭৬ টাকায়। অর্থাৎ, চালের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজ ও আলুর শুল্ক কমিয়েছে অন্তবর্তী সরকার। তবে একদিনের ব্যবধানে এসব পণ্যের দামে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। প্রকৃতপক্ষে এর প্রভাব পড়তে কিছুটা সময়েরও প্রয়োজন। এ অবস্থায় গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এখন ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকা। পাশাপাশি সোনালি মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। এ ছাড়া গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। যা কিছুটা কমেছে।
ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন সবজির বাজারে। সরকার পতনের পর থেকে বেশিরভাগ সবজির দাম ক্রেতার নাগালে রয়েছে। ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পটোলের কেজি। এক মাস আগেও পটোলের কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। পটোলের মতো বেশিরভাগ সবজির দাম নেমেছে অর্ধেকের কাছাকাছি। এক মাস আগের ১৫০ টাকা কেজির বেগুন ও করলার কেজি এখন কেনা যাচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।