কয়েক দশকের সবচেয়ে খারাপ খরা মোকাবিলা করছে আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুইয়ে। দেখা দিয়েছে খাদ্যের তীব্র অভাব, বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য ২০০টি হাতি হত্যার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
সরকার বলছে, ক্ষুধার্ত হাজার হাজার মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করতেই হাতি হত্যার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হত্যার পর এসব হাতির মাংস নাগরিকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
সোমবার দেশটির পার্ক ও বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র তিনশে ফারাও গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ তীব্র খাদ্য ঝুঁকির মুখে পড়ায় আমরা ২০০টি হাতি হত্যার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। হাতিগুলোকে কীভাবে হত্যা করা হবে সেবিষয়ে এখন আমরা কাজ করছি।
এল নিনোর-প্রভাবে উদ্ভুত খরা দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলের ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অনেক এলাকায় ফসলের মাঠগুলো ধু ধু মরুভূমির মতো হয়ে গেছে। তীব্র খরা প্রায় ৭ কোটি মানুষকে প্রভাবিত করেছে এবং সমগ্র অঞ্চলজুড়ে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।
খাদ্য ঘাটতির কারণে পানি বাঁচাতে এর আগে হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আফ্রিকার আরেক দেন নামিবিয়া। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, সেখানে বন্যপ্রাণীর সংখ্যার তুলনায় পানির উৎস অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় প্রাণীগুলো খাদ্য এবং পানির সন্ধান লোকালয়ে চলে আসছে।
সরকার একদিকে ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধা নিবারণের জন্য অপর দিকে অবশিষ্ট থাকা পানির উৎসগুলোতে চাপ কমাতে বন্যপ্রাণী হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের দেখানো পথেই হাঁটছে এখন জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুইয়ের বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র বলেন, দেশটিতে যে বনাঞ্চল রয়েছে সেখানে ৪৫ হাজার হাতি বিচরণ করতে পারে, তবে সেখানে এখন রয়েছে ৮৪ হাজারের বেশি হাতি। দেশটির সরকার জানিয়েছে, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হাতি খাবার জোগাতে গিয়ে লোকালয়ে চলে আসছে। ফলে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
দেশটির গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, হাতির আক্রমণে ইতোমধ্যেই এ বছর অন্তত ৩১ জন মানুষ মারা গেছেন। তবে সরকারের হাতি হত্যার এমন সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন প্রাণী অধিকার কর্মীরা।