নিজস্ব প্রতিবেদক; ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের সময় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক দেওয়া এক নিষ্ঠুর নির্দেশনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ওই সময়, আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা না দেওয়ার এবং হাসপাতাল থেকে মুক্তি না দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। তার এই নির্দেশনা ছিল—‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’। এর মাধ্যমে আহত আন্দোলনকারীদের চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং আহতদের বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম আদালতে তার বক্তব্যে এই তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, “আমরা যখন রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে পরিদর্শন করি, তখন সেখানে চিকিৎসাধীন আহতরা এবং তাদের স্বজনরা জানায়, শেখ হাসিনা পালানোর আগে এই হাসপাতাল পরিদর্শন করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’।”
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, “রোগী এবং হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই নির্দেশনার কথা আমাদের জানিয়েছেন, এবং এ সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে, যা আমরা আজ আদালতে জমা দিয়েছি।”
এছাড়া, তিনি জানান, আন্দোলনকারীদের মৃতদেহ প্রশাসনিক নির্দেশে সুরতহাল করতে দেওয়া হয়নি এবং অনেককে মিথ্যা ডেথ সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছিল। এমনকি, আন্দোলনে নিহতদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রকাশের জন্য কিছু ব্যক্তিকে চাপ দেওয়া হয়েছিল।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “শেখ হাসিনার এই নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের প্রমাণ সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই এবং ফরেনসিক পরীক্ষার পর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আদালতে জমা দেওয়া হবে।”
এটি প্রমাণ করে যে, শেখ হাসিনার নির্দেশে গণঅভ্যুত্থানকালে দেশের মানুষের প্রতি কতটা নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করা হয়েছিল এবং সেই সময়ের ঘটনার প্রমাণগুলোকে সর্বোচ্চ আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
রানা/