আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারকে ডিম আমদানি বন্ধ এবং ফিড সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে দেয়ার আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। তা না হলে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিপিএ। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিছ। ডিমের উৎপাদন রয়েছে সাড়ে ৪ কোটি পিছ। চাহিদার থেকে যেখানে উৎপাদন বেশি হচ্ছে, সেখানে ডিম আমদানির প্রশ্নই আসেনা। সরকারের ডিম আমদানির ভুল সিদ্ধান্তে প্রান্তিক খামারিরা লসের মুখে পড়বে। দেশীয় খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে; এতে পরবর্তীতে সংকট আরও বড় আকার ধারণ করবে।
ডিম-মুরগির দাম কমানো সম্পর্কে সংগঠনটি জানায়, ডিম ও মুরগির উৎপাদনে ৭৫ ভাগ খরচ ফিডের, তাই ফিড সিন্ডিকেট করপোরেট গ্রুপগুলোকে শাস্তির আওতায় নিয়ে ফিডের দাম কমিয়ে দেশে ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ কমিয়ে বাজারে ডিম ও মুরগির দাম কমানো সম্ভব। দেশে ডলার সংকট রয়েছে, তার পরেও অযথাই ডলার খরচ করে ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিম আমদানি হচ্ছে।
বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ভারতে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ৫ টাকা, এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন খরচ ৭৬-৮৬ টাকা। আর বাংলাদেশে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ২৯ পয়সা, এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৫৫-১৭০ টাকা। বাংলাদেশে ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ কেন বেশি হচ্ছে, এগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা না নিয়ে ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত ভুল।
ডিম আমদানি বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে সুমন বলেন, প্রান্তিক খামারিরা বাজারের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে থাকেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারকে ডিম আমদানি বন্ধ করতে হবে এবং ফিড সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে দিতে হবে। তা না হলে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ করে দেবে প্রান্তিক খামারিরা।
তিনি বলেন, ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে ফিড উৎপাদনকারী করপোরেট গ্রুপগুলো। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যেখানেই মিটিং হোক না কেন, সেখানে বড় করপোরেট কোম্পানিগুলোকেই ডাকা হয়। প্রান্তিক খামারিদের ডাকা হয় না। অথচ করপোরেট কোম্পানিগুলো দেশের মোট চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ উৎপাদন করে। ডিমের দাম কমাতে সরকারকে প্রান্তিক খামারিদের দিকে নজর দিতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে। ডিমের বাংলাদেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার হাইড্রোল্যান্ড সলিউশন এবং রফতানিকারক ভারতের এক্সপোটার্স শ্রী লাক্সমি নারায়ণ ভা-ার। একটি ভারতীয় ট্রাকে ১১০৪ কার্টন রয়েছে। প্রতি কার্টনে ২১০ পিস করে ডিম রয়েছে। ডিমের আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে ১১ হাজার ১৭২ দশমিক ০৬ ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৪৩ দশমিক ৯২ টাকা।