আরজি করকাণ্ডে চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে কলকাতাসহ ভারতজুড়ে আন্দোলন চলছে। এরপর হেমা কমিটির রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকে শুরু উত্তাল যৌন হেনস্তা নিয়ে মালায়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। এসব নিয়ে যখন চর্চা চলছে, ঠিক তখনই বলিউড নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী শিল্পা শিন্ডে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ক্যারিয়ার শুরুর দিনগুলো নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। কেন তিনি প্রাথমিকভাবে দৃশ্যে রাজি হয়েছিলেন সে সম্পর্কে কথা বলেন শিল্পা। কিন্তু পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তখন তিনি বুঝতে পারেন প্রযোজক সীমা অতিক্রম করছেন।
নিউজএইট্টিন শোশাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিল্পা শিন্ডে বলেন, ‘এটা আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলোর কথা। সেটি ছিল ১৯৯৮-৯৯ সাল। আমি কারও নাম বলতে চাই না, তবে ওরা আমাকে বলেছিল— ‘আপ ইয়ে কাপডে পেহনো অউর ইয়ে সিন করো (তুমি এই পোশাক পরো, আর এই দৃশ্যটা করো)।
তিনি বলেন, আমি ওই পোশাক পরিনি। তবে তখন আমি ছিলাম খুবই সরল, সাদাসিধে। সেই দৃশ্য অনুযায়ী ওই ব্যক্তি ছিলেন আমার বস এবং আর আমাকে তাকে প্ররোচিত করতে বলা হয়েছিল। আমি যখন ওই দৃশ্যটি করি, তখন ওই লোকটি আমার ওপর জোর খাটানোর চেষ্টা করেছিল। তখন আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে আসি। নিরাপত্তারক্ষীরা বুঝতে পেরে আমাকে দ্রুত সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। ওরা ভেবেছিল আমি একটা দৃশ্য তৈরি করব এবং সাহায্যের জন্য ডাকব।
শিল্পা আরও বলেন, যে কয়েক বছর পর আবারও ওই একই প্রযোজকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। যদিও শিল্পা তার নাম প্রকাশ্যে আনতে চাননি। তিনি বলেন, তিনিও এই হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিরই লোক। আমি দৃশ্যটি করতে রাজি হয়েছিলাম। কারণ উনিও একজন অভিনেতা ছিলেন। এ অভিনেত্রী আরও বলেন, আমি মিথ্যা বলছি না। তবে ওর নাম নিতেও পারছি না। ওর ছেলেমেয়েরা সম্ভবত আমার থেকে কিছুটা ছোট এবং যদি আমি ওর নাম প্রকাশ্যে আনি তাহলে ওর ছেলেমেয়েরাও কষ্ট পাবে।
শিল্পা শিন্ডে বলেন, কয়েক বছর পর আবারও ওর সঙ্গে দেখা হয়। তখন অবশ্য তিনি আমার সঙ্গে সহৃদয় হয়েই কথা বলেছিলেন। তিনি আমাকে চিনতেও পারেননি। এমনকি আমাকে একটা ছবির চরিত্রে কাজও দিয়েছিলেন। তবে আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। ওর হয়তো এখন আমার কথা মনেও নেই।
‘ভাবিজি ঘর পর হ্যায়’ দিয়ে শিল্পা শিন্ডে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। অভিনেত্রী বলেন, তার মতো ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেকের ক্ষেত্রেই একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি বলেন, তার মতো ‘কেউ কেউ পালিয়ে গেছে’। শিল্পার বলেন, অন্য অনেকেই তাকে বলেছেন— ‘তারা একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি সুপরিচিত ব্যক্তিত্বের সঙ্গেও। শিল্পার কথায়, ‘লোকে যৌন হেনস্তার কথা বলেন, তবে আমার মনে হয়— যাদের কাছে এ ধরনের প্রস্তাব আসে, তাদের কাছে না বলার সুযোগও কিন্তু থাকে।’