আমাদের পৃথিবীকে প্রায় দুই মাস প্রদক্ষিণ করতে যাচ্ছে নতুন একটি গ্রহাণু। আকার-আকৃতি ও পৃথিবীকে প্রদক্ষিণের ধারণা থেকে এটিকে বলা হচ্ছে ‘মিনি চাঁদ’।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন আবিষ্কৃত গ্রহাণুটি অস্থায়ীভাবে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলে ধরা পড়বে। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে আমাদের পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে এটি। তারপর গ্রহাণুটি একটি সূর্যকেন্দ্রিক কক্ষপথে (সূর্যের চারপাশের কক্ষপথ) ফিরে যাবে। নাসার অর্থায়নে দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক গ্রহাণু টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম-অ্যাটলাস ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রথম গত ৭ আগস্ট গ্রহাণুটি দেখতে পান।
মাদ্রিদের কমপ্লুটেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক বিজ্ঞান অনুষদের গবেষক কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস বলেন, গ্রহাণুটির ব্যাস সম্ভবত প্রায় ৩৭ ফুট (১১ মিটার)। তবে এর আকার নিশ্চিত করতে আরও পর্যবেক্ষণ এবং তথ্যের প্রয়োজন।
২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্কের উপর দিয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা গ্রহাণুর চেয়ে এটি বড় হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় ৫৫ থেকে ৬৫ ফুট আকারের চেলিয়াবিনস্ক গ্রহাণুটি সেই সময় বাতাসে বিস্ফোরিত হয়।
এটি জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে ২০ থেকে ৩০ গুণ বেশি শক্তি নির্গত করে এবং সূর্যের চেয়ে বেশি উজ্জ্বলতা উৎপন্ন করে। ক্ষতিগ্রস্ত করে ৭ হাজারের বেশি ভবন।
তবে ‘মিনি চাঁদ’ খ্যাত নতুন গ্রহাণুটি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের কোনো ঝুঁকিতে নেই বলে জানিয়েছেন দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস। মহাকাশের পাথরটি প্রায় ২.৬ মিলিয়ন মাইল (৪.২ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে প্রদক্ষিণ করবে, যা পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যবর্তী দূরত্বের প্রায় ১০ গুণ।
পৃথিবীতে আগেও অন্যান্য অস্থায়ী ‘মিনি-মুন’ ধারণ করেছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি গ্রহাণুকে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। এটি কয়েক মাস পরে চলে গিয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি সনাক্ত হওয়ার আগে কয়েক বছর ধরে আমাদের গ্রহকে প্রদক্ষিণ করেছিল এটি।