পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের হারনাই জেলায় সড়কে পেতে রাখা একটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণে ১১ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ৬ জন কয়লা শ্রমিক আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোরে ঘটে এই দুঃখজনক ঘটনা।
পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা জানান, বিস্ফোরিত বোমাটি ছিল একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)। বিস্ফোরণটি হারনাইয়ের একটি কয়লা খনির কাছে ঘটে, যেখানে কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক খনি এলাকা থেকে শহরের দিকে রওনা দিচ্ছিল। ট্রাকটির মধ্যে মোট ১৭ জন শ্রমিক ছিলেন। সড়কে পেতে রাখা বোমাটি বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাকটির অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এক সরকারি বিবৃতিতে বলেন, “এই ঘটনা জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।” পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ তার অফিসের মাধ্যমে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শোক জানিয়েছেন এবং সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন যে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার জন্য তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
বেলুচিস্তান পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ, যেখানে খনিজ সম্পদের বিপুল মজুদ রয়েছে। এই প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলোর জন্য এটি একটি লক্ষ্যবস্তু, কারণ তারা এই সম্পদের উপর অধিকার দাবি করে।
শুক্রবারের বোমা বিস্ফোরণের দায় কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে, বালুচ জঙ্গি গোষ্ঠী, বিশেষ করে বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), প্রায়ই এই অঞ্চলে খনি শ্রমিকদের এবং খনিজ সম্পদ উত্তোলনকারী প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে থাকে।
বিএলএ ৩১ জানুয়ারি, বেলুচিস্তানের কালাত জেলায় একটি হামলায় অন্তত ১৮ পাকিস্তানি সৈন্যকে হত্যা করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য এটি ছিল একটি মারাত্মক দিন। সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বালুচিস্তানে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার পেছনে বিএলএ’র ভূমিকা সম্পর্কে সতর্কতা প্রকাশ করেছে।