শ্রীলঙ্কার সাফারি পার্ক থেকে অসংখ্য প্রজাপতিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড় বিনা অনুমতিতে কাচের বৈয়ামে ভরে নিয়ে যাচ্ছিলেন ইতালির দুই নাগরিক। পিতা-পুত্র ওই দুই ইতালীয়কে হাতে-নাতে ধরে ফেলে কর্মীরা। অবশেষে প্রজাপতি চুরির দায়ে দুইজনকে ২ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে লঙ্কান আদালত। খবর বিবিসির।
শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পূর্বে বাত্তারামূল্লায় অবস্থিত ইয়ালা ন্যাশনাল পার্ক দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিশাল আয়তনের বন্যপ্রাণী উদ্যান, যেখানে চিতাবাঘ, হাতি ও বুনো মহিষ সহ অন্যান্য প্রাণী রয়েছে।
পার্কটি থেকে চলতি বছরের 8 মে রেঞ্জার্সরা ইতালির নাগরিক লুইগি ফেরারি (৬৮) এবং তার ২৮ বছর বয়সী ছেলে মাতিয়াকে পোকামাকড় সম্বলিত শতাধিক বৈয়ামসহ গ্রেপ্তার করে।
পিতা-পুত্র মিলে সাফারি পার্ক থেকে মোট ৯২ প্রজাতির প্রজাপতিসহ শত শত স্থানীয় পোকামাকড় বৈয়ামে ভরে নিয়েছিল। পোকামাকড় ধরার জন্য তারা বিশেষ আলোর প্রলুব্ধক ও রাসায়নিক ব্যবহার করেছে।
শ্রী লঙ্কার আদালত সেপ্টেম্বরের শুরুতে পোকামাকড়ের অবৈধ সংগ্রহ, দখল এবং পরিবহনের জন্য দুই ইতালীয়কে দোষী সাব্যস্ত এবং দেশে বন্যপ্রাণী অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ জরিমানা দিয়েছে। ইতালীয় পিতা ও ছেলেকে ৬ কোটি শ্রীলঙ্কান রুপি (২ লাখ ডলার) জরিমানা করা হয়। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের দুই বছরের কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।
পার্কের একজন রেঞ্জার বলেন, ঘটনার দিন একজন সাফারি জীপ চালক খবর দেন যে রাস্তার পাশে একটি ‘সন্দেহজনক গাড়ি’ পার্ক করা হয়েছে এবং দুই ব্যক্তি পোকামাকড় ধরার জাল নিয়ে বনে ঢুকে পড়েছে।
নিশান্ত নামে এক রেঞ্জার জানান, রেঞ্জাররা অভিযান চালিয়ে পিতাপুত্রকে সনাক্ত করে এবং আমরা তাদের গাড়িতে পোকামাকড় ভরতি কয়েকশত জার খুঁজে পাই। সব পোকামাকড় মারা গিয়েছিল। সেগুলো সব রাসায়নিক ভর্তি বোতলে রাখা হয়েছিল।
ইতালীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ইতালির পিতা-পুত্র দুই নাগরিক ওই সময় ছুটিতে শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং ঘটনার পর থেকে দেশটিতে আটক রাখা হয়েছে।
লুইগি ফেরারি মূলত একজন অর্থোপেডিক সার্জন, যিনি পা ও গোড়ালির আঘাতের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তবে তার বন্ধুরা তাকে একজন পোকা-প্রেমী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি ইতালির উত্তরের শহর মোডেনায় একটি কীটতত্ত্ব সমিতির সদস্যও।