নিজস্ব প্রতিবেদক: দুবাইতে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের তিন পেস বোলার সম্পর্কে। দুবাইয়ের উইকেটে পেস এবং স্পিন নিয়ে কী ধরনের কন্ডিশন থাকবে, এবং এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কোন পেস বোলাররা সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারেন, সেটি নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
এই ম্যাচগুলোর জন্য ভারত যে উইকেট প্রস্তুত করতে চাচ্ছে, তাতে স্পিনারদের কিছুটা সুবিধা থাকতে পারে। ভারতের স্কোয়াডে পাঁচজন স্পিনার রয়েছেন, তাই ভারত এমন উইকেট প্রস্তুত করতে চাইবে যেখানে স্পিনের সহায়তা থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশের পেস বোলারদের জন্য এটি কী ধরনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে? বাংলাদেশি পেস বোলাররা সাধারণত ফ্ল্যাট উইকেটে ভালো বোলিং করেন না, তবে স্টিকি উইকেটে তাদের বিশেষ শক্তি উন্মোচিত হতে পারে।
মোস্তাফিজুর রহমান সম্পর্কে কথা বলতে গেলে, তিনি এই ধরনের উইকেটে সবচেয়ে ভালো কাজ করতে পারেন। তাঁর কাটার এবং স্লোয়ার বোলিংয়ের বৈচিত্র্য এমন উইকেটে কার্যকরী হতে পারে। বিশেষ করে, মোস্তাফিজ তার রিস্ট কাটার বা ব্যাক অফ দ্য হ্যান্ড স্লোয়ারে বিশেষভাবে কার্যকরী। আর এ ধরনের উইকেটে, যেখানে একটু স্পিন সহায়তা থাকতে পারে, মোস্তাফিজের বোলিং আদর্শ হতে পারে।
তবে, প্রশ্ন হচ্ছে, যদি মোস্তাফিজ মাঠে নামেন, তাহলে কোন দুটি পেস বোলারকে বাদ দেওয়া হবে? এখানে, তাসকিন আহমেদ অবশ্যই মূল পেস বোলার হিসেবে থাকবেন, কারণ তার গতির কারণে তিনি যে কোন উইকেটে কার্যকরী। তবে, দ্বিতীয় পেসার হিসেবে সাকিব আল হাসান এবং নাহিদ রানা এই দুইজনের মধ্যে থেকে একজনকে বাদ দিতে হবে।
নাহিদ রানার খেলা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, বিশেষত স্টিকি উইকেটে। তার অতিরিক্ত ১০ কিলোমিটার গতির কারণে, তিনি অনিয়মিত বাউন্স তৈরি করতে পারেন এবং ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বেশ ভালো পারফর্ম করতে পারেন। তাঁর স্ট্রেন্থে এই কন্ডিশনে বিশেষভাবে পার্থক্য তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিহাস দেখলে, বাংলাদেশি পেস বোলাররা সাধারণত সিমিং এবং স্টিকি কন্ডিশনে ভালো বোলিং করেন। এই ধরনের উইকেটে তাদের পেসের অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ফ্ল্যাট কন্ডিশনে তাদের এই গতির সুবিধা এতটা কার্যকরী হয় না। সুতরাং, যদি আমরা দুবাইয়ের পিচে নাহিদ রানা এবং মোস্তাফিজুর রহমানকে মাঠে দেখি, তাদের অতিরিক্ত পেস এবং বোলিং বৈচিত্র্য বাংলাদেশের বোলিং কম্বিনেশনে বিশেষ সুবিধা এনে দিতে পারে।
তবে, ভারতের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তারা যদি স্পিন সহায়ক উইকেট প্রস্তুত করে, তবে এটি তাদের জন্য কিছুটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিনের বিপক্ষে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন, বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। গত কিছু সিরিজে, যেমন শ্রীলঙ্কার সাথে, তাদের ব্যাটসম্যানরা সুইপ খেলার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করেছে এবং তারা স্পিনের বিপক্ষে বেশ ভুগেছে। সুতরাং, যদি বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে স্পিনিং কন্ডিশনে তাদের পেস বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম হয়, তবে এটি বড় একটি সুবিধা হতে পারে।
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের তিনটি পেস বোলার হওয়া উচিত: তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান এবং নাহিদ রানা। এই তিনজন বোলারের বৈচিত্র্য এবং গতির মধ্যে রয়েছে এমন কিছু যা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। তবে, ম্যাচের কন্ডিশন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন কোচ এবং নির্বাচকরা।
আপনার কি মনে হয়? বাংলাদেশের কোন তিন পেস বোলারদের আপনি ভারত-বিপক্ষে খেলতে দেখতে চান? কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।
সোহাগ আহমেদ/