রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশকে বড় সুখবর দিয়েছে চীন। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে বেইজিং। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
চীনা দূতাবাস জানায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীন-আফ্রিকান শীর্ষ সম্মেলনে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১ ডিসেম্বর ২০২৪-এ বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের দিন থেকে বাংলাদেশ শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ট্যারিফ কোটা ব্যবস্থাপনা সাপেক্ষে পণ্যের জন্য শূন্য-শুল্ক ব্যবস্থাপনা শুধুমাত্র কোটার পরিমাণের মধ্যে থাকা পণ্যগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে। কোটার পরিমাণ অতিক্রম করা পণ্যে মূল শুল্ক হারের অধীন হবে।
এর আগে ২০২২ সালে চীন ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়, যার মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ৩৮৩টি নতুন পণ্য ছিল। ২০২০ সালে ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্য এই সুবিধা পেতো।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে চীন থেকে ১৮ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। অপরদিকে, বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানি হয় ৬৭৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।
সূত্র জানায়, ২০২০ অর্থবছরে চীন দুই দশমিক চার ট্রিলিয়ন মূল্যমানের পণ্য আমদানি করে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অংশ মাত্র শুন্য দশমিক শুন্য পাঁচ শতাংশ। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করছে যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান এমএ রাজ্জাক একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন, চীনের আমদানি বাজেটের এক শতাংশও যদি বাংলাদেশ থেকে যায়, তাহলেও আমরা বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করতে পারব।
তবে অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেন, চীনের বাজারে বড় আকারে প্রবেশ করতে হলে বাংলাদেশকে তাদের রপ্তানি পণ্যে আরও বৈচিত্র্য আনতে হবে। এ মুহূর্তে এটি বড় আকারে তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল।
এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরে জসিম জানান, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর চীন থেকেই সবচেয়ে বেশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, যার পরিমাণ আট মিলিয়ন ডলার। আমরা আশা করছি চীনে রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়বে। দেশ থেকে চীনে আম রপ্তানির প্রক্রিয়া মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী বছর থেকেই চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। সেইসঙ্গে কাঁঠাল ও পেয়ারার মতো অন্যান্য ফলও রপ্তানি করা হবে।