শিরোনাম :
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের একাদশ ঘোষণা নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর ঘোষণা আসছে আজ দুই ম্যাচ হেরেও সেমিফাইনালের স্বপ্নে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় কামনা করছে পাকিস্তান সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি: সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন পরিমাণে পরিবর্তন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে মিরাজ! মুশফিকসহ ৩ পরিবর্তন হতে পারে পাকিস্তানের হার, সেমিফাইনালে বাংলাদেশের পথ এখন পানি মত সহজ সৌদি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর সহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রার আজকের বিনিময় হার আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি, দেখেনিন আজকের সকল দেশের টাকার রেট আরো কমে গেল ডলারের বিনিময় রেট এবার এল সৌদি প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ

বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য সুযোগ: দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হওয়া

  • আপডেট সময় : রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশ এখন একটি বিশেষ ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যা তাকে দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হওয়ার পথে একটি বড় সুযোগ এনে দিতে পারে। দেশটির ভৌগোলিক সুবিধা, সমুদ্রপথের সংযোগ, এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনাগুলি একত্রে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ তার অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারে।

বাংলাদেশের ভূ-অবস্থান তার সবচেয়ে বড় শক্তি। বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চল সরাসরি আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথের সঙ্গে যুক্ত, যা বিশ্ববাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর বাণিজ্যিক গতিবিধির প্রায় ৯০ শতাংশ জলপথে হয়ে থাকে, এর মধ্যে ৬০ শতাংশই বঙ্গোপসাগর দিয়ে ট্রান্সপোর্ট করা হয়। বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করা হলে, তা শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি বড় সুবিধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিশ্বের ৪৪টি ভূবেষ্টিত দেশ, যাদের কোনো সমুদ্রবন্দর নেই, তারা অন্য দেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তবে ভারতীয় শিলিগুড়ি করিডরের কারণে বাংলাদেশের এই সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু, শিলিগুড়ি করিডর বা অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা দূর করতে বাংলাদেশ যদি সঠিক পদক্ষেপ নেয়, তবে দেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আরও শক্তিশালী হতে পারে।

নেপাল এবং ভুটান, দুই ভূবেষ্টিত দেশ, যাদের কোন সমুদ্রবন্দর নেই, তারা ভারত এবং চীনের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর হতে পারে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর। শিলিগুড়ি করিডর বা অন্য কোনো বাধা দূর হলে, বাংলাদেশ সরাসরি নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে, যা দেশের জন্য বড় একটি অর্থনৈতিক সুবিধা আনবে।

বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে নেপাল এবং ভুটান বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। নেপাল তার হাইড্রো পাওয়ার রপ্তানি করতে চাইছে বাংলাদেশে। যদি এই দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়, তবে বাংলাদেশ শক্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাব হয়ে উঠতে পারে। এই সম্পর্কের জন্য শিলিগুড়ি করিডরের মাত্র ৩০ মাইল পথের অনুমতি পেলেই বাংলাদেশ এবং এই দুই দেশ উত্পাদিত শক্তি এবং খনিজ পদার্থ বিনিময় করতে পারবে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে।

বিশ্বব্যাপী সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল আয়ের সুযোগ রয়েছে। সিঙ্গাপুরের মতো দেশসমূহ তার বন্দর ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছে। বাংলাদেশও এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সমুদ্রপথে কার্যক্রম পরিচালনা করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। সিঙ্গাপুরের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে যে পরিমাণ আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই সুযোগ বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ তার বন্দর থেকে ট্রান্স শিপমেন্ট হাব হিসেবে পরিচিত হতে পারে। সিঙ্গাপুর যেমন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ট্রান্স শিপমেন্ট কার্গো পরিচালনা করে, তেমনি বাংলাদেশও এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিশ্বের ২০ শতাংশ ট্রান্স শিপমেন্ট পরিচালনা করতে সক্ষম হতে পারে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি আরও ত্বরান্বিত হবে, এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রভাব আরও দৃঢ় হবে।

বাংলাদেশের সামনে রয়েছে এই বিশাল সুযোগটি, যেখানে তার ভৌগোলিক সুবিধা ও সমুদ্রপথের সুবিধা ব্যবহারের মাধ্যমে দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। সরকার যদি এই সুবিধাগুলি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে, তবে বাংলাদেশ তার অর্থনীতিকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ এখন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে যদি তার নৌপথ, বন্দর, এবং ভূ-অর্থনৈতিক সুযোগগুলি সদ্ব্যবহার করে, তবে দক্ষিণ এশিয়ার এক অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে কোনো বাধা থাকবে না।

অন্যরা যা পছন্দ করছে
© All rights reserved © 2024 bdnews24us.com