ওয়াশিংটনে এক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই নেতা আঞ্চলিক কৌশলগত সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ভারতকে মার্কিন অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাব।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মোদি চতুর্থ বিশ্বনেতা, যিনি হোয়াইট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সুযোগ পেলেন। ট্রাম্প মোদিকে ‘বিশেষ বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা
বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, তিনি মোদি ও ভারতের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক অনুভব করেন। তিনি রসিকতার ছলে মোদিকে তার চেয়েও ‘শক্তিশালী দরকষাকষিকারী’ বলে উল্লেখ করেন।
এছাড়া, চীনকে মোকাবিলার কৌশলে ভারতকে ‘মূল অংশীদার’ হিসেবে বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করতে ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, তার প্রশাসন ভারতের কাছে উন্নত প্রযুক্তির এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার বিক্রির পরিকল্পনা করছে।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “এই বছরের শুরু থেকেই আমরা ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াচ্ছি। বহু বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির চুক্তি করতে চলেছি এবং উন্নতমানের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।”
বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব
ভারতের শুল্কনীতির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও ট্রাম্প জানান, দুই দেশ একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। মোদিও বাণিজ্য সম্প্রসারণে আশাবাদী।
মোদি বলেন, “ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা তেল ও গ্যাসের বাণিজ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। খুব শিগগিরই একটি পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য চুক্তি হবে বলে আশা করছি।”
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা
বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয়, যেখানে বাংলাদেশের প্রসঙ্গও উঠে আসে। ট্রাম্প আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ-ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলা করতে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চাইছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন সমঝোতা গড়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।