নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিন্ন নদী, তিস্তা, যেটির পানি ভাগাভাগি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একাধিক বার আলোচনা হলেও, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি ভাগাভাগি নিয়ে চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি, ফলে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে এক গভীর অসন্তোষ বিরাজ করছে। একইসঙ্গে, ভারত সীমান্তে বিএসএফের সহিংস আচরণ ও গুলি চালানোর ঘটনা এখনও অব্যাহত রয়েছে, যা বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য আরও বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
এ পরিস্থিতিতে, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবং সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ভারতকে দুটি শর্ত দিয়েছে বন্ধুত্বের প্রস্তাব। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লালমনিরহাটে দলের অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এবং ভারতকে পরিষ্কারভাবে দুটি শর্ত প্রদান করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ভারতকে আগেও বলেছি, এখনো পরিষ্কারভাবে বলছি, যদি ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়, তবে প্রথমেই তিস্তার পানি বাংলাদেশকে দিতে হবে এবং সীমান্তে গুলি করে নিরীহ বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা বন্ধ করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, কিন্তু সেই বন্ধুত্ব সম্মান এবং সমতার ভিত্তিতে হবে। আমাদের পাওনা আদায় না হলে বন্ধুত্ব স্থাপন করা সম্ভব নয়।’’
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘তিস্তা নদী ছাড়া ভারত থেকে আরও ৫৪টি নদী আমাদের দেশে প্রবাহিত হয়। ভারত এই নদীগুলোর পানি তুলে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যার ফলে বাংলাদেশের কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারছেন না, জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না। একদিকে যখন পানি বন্ধ করে দেয়, তখন পুরো এলাকা খরায় ভুগে যায়, আবার যখন পানি ছেড়ে দেয়, তখন কৃষি জমি, ঘর-বাড়ি, গ্রাম সব কিছু ভেসে যায়।’’
এমন অবস্থায়, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবং সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি তাদের ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে। লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারি, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই অংশ নিচ্ছেন এই কর্মসূচিতে এবং ‘‘জাগো বাহে তিস্তা’’ স্লোগানে পুরো অঞ্চলটি মুখরিত হয়ে উঠছে।
এভাবে, বিএনপি তাদের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে ভারতের কাছে দুটি শর্তে বন্ধুত্বের প্রস্তাব দিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগি ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবিতে তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
আয়শা/