বাংলাদেশসহ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) ১০০টি পণ্য চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের শুরুতে চীন-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনে চীন বাংলাদেশসহ এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১০০ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।’
এর আগে ২০২২ সালে চীন বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করে, যার মধ্যে ৩৮৩টি নতুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল, বিশেষ করে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। ২০২০ সালে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৯৭ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা ছিল।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। বর্তমানে চীন থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ২২.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, যেখানে বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানি মাত্র ৬০০ মিলিয়ন ডলার। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে চীন থেকে, যার পরিমাণ প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, ‘আমরা চীনে আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির আশা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রপ্তানির প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়ে এসেছে। আগামী বছর থেকে আমরা চীনে আম রপ্তানি করতে পারব।’ পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, কাঁঠাল, পেঁপে এবং অন্যান্য কিছু পণ্য রপ্তানির জন্যও বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে কাজ করছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে চীন ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল, যেখানে বাংলাদেশের অংশ ছিল মাত্র ০.০৫ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায় যে, চীনের বাজারে বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (আরআইপিডি) প্রধান মো. আব্দুল রাজ্জাক এক গবেষণায় বলেন, বাংলাদেশ যদি চীনের বাজারের মাত্র ১ শতাংশ দখল করতে পারে, তাহলে ২৫ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। চীনে রপ্তানি বাড়াতে হলে বাংলাদেশকে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে হবে।