কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষায় সম্প্রতি যে বিতর্কিত প্রশ্নটি দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্নে বলা হয়েছিল, ২০২৪ সালে “প্রতিবেশী কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছে?” এবং এতে ভুলভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরূপে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি, এমনকি তার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এই ভুল তথ্যের কারণে প্রশ্নটি বিভ্রান্তিকর হয়ে ওঠে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার আশঙ্কা তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এমন ভুল প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর এবং খ্যাতনামা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, “এটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং তার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি ভুল তথ্য, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভুল ধারণা সৃষ্টি করতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের প্রশ্ন ইচ্ছাকৃতভাবে মেধার পরীক্ষা নিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সমীর কুমার দাসও এই প্রশ্নের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, “যদি এটি সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন হিসেবে থাকে, তবে রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি কূটনৈতিক সম্পর্কের সাথে যুক্ত কিনা, তা আরও যাচাই করা প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজি বোর্ডের সদস্যরা জানায়, শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন, তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো লিখিত বক্তব্য প্রকাশ করা হয়নি।
এ প্রশ্নের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়াতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। তাই এই বিতর্কিত প্রশ্নের সঠিকতা নিয়ে পুনরায় চিন্তা-ভাবনা করা উচিত বলে মনে করা হচ্ছে।