প্রস্তুত হয়নি ইজতেমা ময়দান, মুসল্লিদের সামিয়ানা আনার পরামর্শ

রিপোর্টার :
  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২০০৮ সাংবাদটি পড়া হয়েছে

গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ তীরে আয়োজিত এবারের বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের কিছু অংশ চট দিয়ে প্যান্ডেল করা হলেও বেশিরভাগ অংশ ফাঁকা রয়েছে। সেখানে শুধু বাঁশের খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের ইজতেমা মাঠে বিশাল এলাকাজুড়ে বাঁশের খুঁটি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও তাতে ছিল না চটের ছাউনি।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরুর বাকি আর মাত্র তিন দিন। এখনো ইজতেমা ময়দান পুরোপুরি তৈরি হয়নি। মাঠের বেশির ভাগ অংশে এখনো টানানো হয়নি সামিয়ানা। ইজতেমায় ৪০ জেলার মুসল্লিদের সামিয়ানা আনতে বলা হয়েছে।

ইজতেমার মুরব্বি প্রকৌশলী আব্দুর নূর বলেন, গত বছর সা’দ অনুসারীদের মাঠ হস্তান্তরে বিলম্ব হওয়ার কারণে সামিয়ানা দীর্ঘদিন ময়দানে টানানো অবস্থায় ছিল। পরে রোদ-বৃষ্টিতে সিংহভাগ চট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার চট সংকট দেখা দিয়েছে। এতে এবার পুরো মাঠে চটের সামিয়ানা টানানো সম্ভব হয়নি। তাই ইজতেমার মুরব্বিদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা থেকে বিশ্ব ইজতেমাস্থলে আগত তাবলিগ জামাতের মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে সামিয়ানা এনে টানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। এখন মুসল্লিরা এলেই পুরো মাঠ প্রস্তুত হয়ে যাবে। সোমবার রাতেই জেলাওয়ারী খিত্তায় (অবস্থান) সামিয়ানা টানানোর জন্য তাবলিগের কর্মীরা আসবেন। এছাড়াও পাহারা ও খিত্তাসহ বিভিন্ন নজমের কর্মী/সাথীরাও সোমবার রাতে ইজতেমাস্থলে চলে আসবেন। আর বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলার চিল্লাধারী মুসল্লিরা ইজতেমার ময়দানে চলে আসবেন।

সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে বিদেশি মেহমানদের জায়গা, রান্নার জায়গাসহ অন্যান্য স্থাপনা। বিদেশি মেহমানখানার পাশেই তৈরি করা হয়েছে বয়ানের মঞ্চ। মঞ্চের সামনে কয়েক একর জায়গায় টানানো হয়েছে চটের সামিয়ানা। এর বাইরে পুরো মাঠে শুধু বাঁশ পুঁতে রাখা হয়েছে। মাঠে ইজতেমার মুসল্লিরা এখনো পুরোপুরি আসেনি। তবে কিছু সংখ্যক মুসল্লিকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ইজতেমা ময়দানের শেষ মুহূর্তের টুকিটাকি কাজ করতে দেখা গেছে।

মাঠের উত্তর-পূর্ব পাশে কথা হয় রাজশাহী থেকে আসা তাবলিগের সাথী ষাটোর্ধ্ব আজাদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৪৪ বছর ধরে ইজতেমায় অংশ নিচ্ছি। এবারই প্রথম মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে সামিয়ানা নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। প্রতিটি জেলার জন্য ১৮ ফুট প্রস্থ ও ৩৬ ফুট লম্বা জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাবলিগের সাথীরা ইজতেমা শেষে আবার নিজ দায়িত্বে তাদের এ সামিয়ানা খুলে নিয়ে যাবেন।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হবে। তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি। সে হিসেবে এখন মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা।

সামিয়ানার বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ইজতেমা মাঠের আগের চটগুলো নষ্ট হয়ে গেছে, ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ কারণে চট সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা মুসল্লিদের নিজ নিজ দায়িত্বে সামিয়ানা নিয়ে আসতে বলেছি। ৬৪ জেলার মধ্যে ৪০ জেলার মুসল্লিদেরই নিজেদের সামিয়ানার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। তারা এলেই পুরো মাঠে সামিয়ানা টানানো হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যরা যা পছন্দ করছে
© All rights reserved © 2024 bdnews24us.com