india pakistan boder

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষের তীব্রতা: নতুন যুদ্ধের শঙ্কা

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে, যা অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের কথা উল্লেখ করার পর থেকে, জম্মু-কাশ্মীরের লাইন অফ কন্ট্রোল (LOC) এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে দুই পক্ষই ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, এবং উভয় দেশের সেনাদের মধ্যে হতাহতের খবর উঠে এসেছে।

গত বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে পাকিস্তান সেনারা একবারে যুদ্ধবিরোধী চুক্তি লঙ্ঘন করে ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি চালায়। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। একদিন পর, কৃষ্ণাঘাটি সেক্টরে পাকিস্তান সেনারা আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এবং ভারতীয় সেনাদের উপর গুলি চালায়, ফলে আরও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে করে সীমান্তে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়।

ভারতীয় বাহিনীর লেফটেনেন্ট জেনারেল নবীন সচদেব জানিয়েছেন, কাশ্মীরের কিছু এলাকায় সম্প্রতি সন্দেহজনক কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে, এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

এই উত্তেজনা এমন একটি সময়ে ঘটেছে, যখন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ৪০ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল পোলাওয়ামা হামলায়। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, জম্মু-কাশ্মীরের পোলাওয়ামা জেলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বহনকারী কনভয়ে হামলা চালানো হয়, যা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন সংকটের জন্ম দেয়। সেই থেকে সীমান্তে উত্তেজনা একের পর এক বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সম্প্রতি কাশ্মীর দিবসে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান দশটি যুদ্ধ করতে সক্ষম, যদি কাশ্মীর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তারা জানিয়েছে, সীমান্তে ছোটখাটো সংঘর্ষ একেবারে অস্বাভাবিক নয়, তবে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। একই সঙ্গে, পাকিস্তানকে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

এই উত্তেজনা ভারতের পোলাওয়ামা হামলার ছয় বছর পর পুনরায় দেখা যাচ্ছে, যা পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি যদি আরও উত্তপ্ত হয়, তবে এই সংঘর্ষ শুধু সীমান্তে নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সামগ্রিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্যও বিপজ্জনক হতে পারে।

বিশ্বের অন্যতম দু’টি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে, তা শুধু তাদের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও একটি বড় সমস্যা হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top