2 3

যুক্তরাজ্য মন্দার কবল থেকে বেরোল

বছরের শুরুতে প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি হয়েছে যুক্তরাজ্যের আর তার বদৌলতে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দা থেকে বেরিয়ে গেছে দেশটি। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বছরের প্রথম অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।মূলত সেবা খাতের ওপর ভর করে বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্রিটেনের প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেবা খাতের মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁ, শিল্প ও বিনোদনের হাত ধরে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়া এবারের ইস্টার সানডে মার্চ মাসে পড়ায় অর্থনীতিতে গতি এসেছে বলে মনে করছে দেশটির অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস (ওএনএস)। গত বছর ইস্টার সানডে পড়েছিল এপ্রিল মাসে।বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, গত বছরের শেষ দুই ত্রৈমাসিকে টানা যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক সংকোচন হওয়ায় মন্দার কবলে পড়ে দেশটি।

 

 

সাধারণত টানা দুই প্রান্তিকে অর্থনৈতিক সংকোচন হলে ধরে নেওয়া হয় যে মন্দা হয়েছে।এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হয়েছে। যদিও দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টি বলছে, এখনই বিজয় উদ্‌যাপন করার কিছু হয়নি।গত মঙ্গলবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বিবিসিকে বলেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে ঠিক; কিন্তু তার গতি খুব একটা বেশি নয়।এদিকে ২০২২ সাল থেকে শুরু হওয়ার উচ্চ মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডও নীতি সুদহার বাড়ায়। ফলে যুক্তরাজ্যের নীতি সুদহার এখন গত ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বাস্তবতায় অর্থনীতির গতি স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড কবে থেকে নীতি সুদহার কমাতে পারে, সে নিয়ে পূর্বাভাস আসার পর সম্প্রতি বন্ধকি ঋণের সুদহার বেড়েছে।ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বলেছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার সীমার কাছাকাছি চলে আসতে পারে। জুন মাসে নীতি সুদহার কমানো হতে পারে—বাজারে এমন আশাবাদ তৈরি হয়েছে।

 

কিন্তু প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হারে প্রবৃদ্ধি হওয়ায় সেই আশার গুড়ে কিছুটা বালি পড়েছে।গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের উপপ্রধান অর্থনীতিবিদ রুথ গ্রেগর বলেছেন, এ বাস্তবতায় ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের তড়িঘড়ি করে নীতি সুদহার কমানোর দরকার নেই। তিনি আরও বলেন, কর্মসংস্থান ও মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।যুক্তরাজ্য নানা রকম সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুরু হয়েছিল ব্রেক্সিট দিয়ে, এরপর অন্যান্য ঘটনার ধাক্কায় তার জের চলছেই—করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইত্যাদি। করোনার সময় উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যুক্তরাজ্য। এরপর ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকেই দেশটি মন্দার কবলে পড়বে বলে ধারণা করা হয়েছিল, সেটা না হলেও ২০২৩ সালের শেষভাগে মন্দা এড়াতে পারেনি তারা। এবার সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এল দেশটি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top