নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক সংকট নিয়ে ভারতের রাজনীতি এখন উত্তাল। ১১ বছর ক্ষমতায় থাকার পর প্রধানমন্ত্রী মোদি কি তাঁর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি? ঘরে-বাইরে নানা চাপে তাঁর ক্ষমতার মসনদ কি টলমল করছে? ট্রাম্পের শুল্কনীতি, আরএসএস-এর অসন্তোষ, আর বিরোধীদের ঐক্য—এসবই যেন মোদির সামনে পাহাড়সম। চলুন, এই সংকটের গভীরে ডুব দিই।
ট্রাম্পের শুল্ক: বন্ধুর চাপে মোদি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির ‘বন্ধুত্ব’ একসময় শিরোনামে ছিল। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ভারতের অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই শুল্ক ভারতের কৃষি ও বাণিজ্য খাতে চাপ সৃষ্টি করছে। মোদি একটি কৃষিবিজ্ঞানীদের সভায় বলেছেন, “কৃষক, পশুপালক, আর মৎস্যজীবীদের স্বার্থে আমি ব্যক্তিগত মূল্য দিতে প্রস্তুত।” এই ‘ব্যক্তিগত মূল্য’ কি ক্ষমতা ছাড়ার ইঙ্গিত? জল্পনা তুঙ্গে।
ট্রাম্পের শুল্ক কেন বড় সমস্যা?
ট্রাম্পের ৫০% শুল্ক ভারতের রপ্তানি বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি করছে। এটি কৃষকদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। মোদির সরকার এখনো এর সমাধান খুঁজে পায়নি।
আরএসএস-এর চাপ: মোদির নিয়ন্ত্রণে টান
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), বিজেপির আদর্শিক মেরুদণ্ড, এখন মোদি-শাহ জুটির ওপর ক্ষুব্ধ। ইংলিশ ভিকাটান জানাচ্ছে, আরএসএস মোদির একক নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে আর রাজি নয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচন নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। আরএসএস-এর পছন্দের নেতা যেমন নীতিন গডকরি বা শিবরাজ সিং চৌহানের নাম উঠছে, কিন্তু মোদি-শাহ তাঁদের পছন্দের লোক চান।
‘৭৫-এ অবসর’ কথাটির মানে কী?
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, ৭৫ বছর বয়সে অবসর নেওয়া উচিত। তিনি নিজে ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ পূর্ণ করবেন, আর মোদি ১৭ সেপ্টেম্বর। ভাগবত অবসর নিলে মোদির ওপর চাপ বাড়বে। এই ‘অবসর নীতি’ কি মোদির ক্ষমতার পথে বাধা হবে?
বিরোধীদের ঐক্য: রাহুলের নতুন উত্থান
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ তুলে তারা জোরালো প্রচার শুরু করেছে। বিহারে ‘মতদাতা অধিকার যাত্রা’ এবং ১ সেপ্টেম্বর পাটনায় সমাবেশের পরিকল্পনা চলছে। রাহুলের তদন্তে কর্ণাটকের মহাদেবপুরায় ১ লাখ ২৫০ জন ভুয়া ভোটারের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, যা বিরোধীদের হাত শক্ত করেছে।
বিহার নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বিহারের আসন্ন নির্বাচন মোদির জন্য বড় পরীক্ষা। এখানে হারলে তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব আরও ক্ষয় হবে। বিরোধীদের ঐক্য এই নির্বাচনে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ: জাট সম্প্রদায়ের ক্ষোভ
মোদি-শাহর নীতির বিরুদ্ধে বিজেপির অভ্যন্তরেও অসন্তোষ বাড়ছে। জাট নেতা জগদীপ ধনখড়ের অপমানজনক পদত্যাগ এবং কৃষ্ণকুমার জানুর বহিষ্কার জাট সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করেছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, এবং পশ্চিম উত্তর প্রদেশে এর প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, নাগাল্যান্ডের বিজেপি মুখপাত্র মোহনলুমো কিকনের দলত্যাগ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দলের ভিত কাঁপাচ্ছে।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক সংকট ২০২৫ সালে ভারতের রাজনীতির দিক বদলে দিতে পারে। ট্রাম্পের শুল্ক, আরএসএস-এর চাপ, বিরোধীদের ঐক্য, আর অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ—এসব মিলে মোদির ক্ষমতার মসনদ টলমল করছে। তবে মোদি অতীতেও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উঠে এসেছেন। আগামী দিনে তিনি কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করবেন, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। আরও রাজনৈতিক খবর জানতে বাংলাদেশ নিউজ২৪ দেখুন।
বাংলাদেশ নিউজ২৪ এর মতামত: আপনি কী মনে করেন, মোদির এই সংকট কি ভারতের রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে? কমেন্টে আপনার মতামত জানান!
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক সংকট কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মোদির রাজনৈতিক সংকট ভারতের অর্থনীতি, বিদেশনীতি, এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এটি বিজেপির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
ট্রাম্পের শুল্ক কীভাবে ভারতকে প্রভাবিত করছে?
৫০% শুল্ক ভারতের রপ্তানি ও কৃষি খাতে চাপ সৃষ্টি করছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে।
আরএসএস কেন মোদির বিরুদ্ধে?
আরএসএস মোদির একক নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে চায় না। তারা দলের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিতে চায়।
বিহার নির্বাচন কেন মোদির জন্য চ্যালেঞ্জ?
বিহারে হারলে মোদির রাজনৈতিক প্রভাব কমবে, আর বিরোধীদের ঐক্য শক্তিশালী হবে।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক সংকট ২০২৫ সালে তুঙ্গে। ট্রাম্পের শুল্ক, আরএসএস-এর চাপ, বিরোধীদের ঐক্য—মোদির ক্ষমতা কি টলমল? বিস্তারিত জানুন।


