সবাইকে স্বাগতম বাংলাদেশ নিউজ২৪ এ
আজকের আলোচনায় আমরা তুলে ধরব জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে নীলা ইস্রাফিলের সরে দাঁড়ানোর ঘটনা এবং তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া। রাজনীতিতে নারীর অবস্থান, দলীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রশ্ন—সবকিছুই আজকের এই আলোচনায় উঠে আসবে। চলুন, শুনে নিই নীলা ইস্রাফিলের কণ্ঠে তার অভিজ্ঞতা ও প্রতিবাদ।
নীলা ইস্রাফিলের সরে দাঁড়ানো ও এনসিপির প্রতিক্রিয়া
সোমবার, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে নীলা ইস্রাফিল ঘোষণা দেন, তিনি আর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে নেই। তার এই ঘোষণার পরপরই এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ‘নীলা ইস্রাফিল এনসিপির কেউ নয়, তবে নাগরিক কমিটিতে ছিলেন।’
এই মন্তব্যের পর নীলা সরাসরি এনসিপির কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন—‘আপনারা এত দিন আমাকে কিসের ভিত্তিতে ব্যবহার করেছেন?’
নারীর কণ্ঠ ও দলীয় রাজনীতির বাস্তবতা
নীলা তার পোস্টে বলেন, ‘আজ যখন আপনাদের নেতার অপরাধ, অনাচার, এবং লিপ্সার বিরুদ্ধে আমি মুখ খুলেছি, তখন আমি আপনাদের কেউ না? এতদিন আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার ত্যাগ আপনাদের পক্ষে ছিল তখন তো কোনো সমস্যা ছিল না। আপনারা কি দল করেন, না কেবল ক্ষমতা আর নারীকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলার একটা কারখানা চালান?’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের অপরাধ ঢাকার জন্য আজ আমাকেই অস্বীকার করছেন? সত্য বললেই কি নারীকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়? এটাই কি আপনাদের নৈতিকতা? এই প্রশ্ন আজ শুধু আমার না, এই প্রশ্ন প্রতিটি নারীর, যাকে আপনারা দলীয় পরিচয়ে ব্যবহার করেছেন, আর পরে ‘অপরিচিত’ বানিয়েছেন।’
রাজনীতিতে নারীর অবস্থান ও নৈতিকতার সংকট
নীলা ইস্রাফিলের বক্তব্যে উঠে এসেছে রাজনীতিতে নারীর অবস্থান ও দলীয় মূল্যবোধের সংকট। তিনি বলেন, ‘আমার কণ্ঠ যখন আপনাদের পক্ষে ছিল, তখন তো ‘আমাদের নেত্রী’, ‘আমাদের শক্তি’ বলে গলা ফাটাতেন। এখন যখন আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি, তখন ‘সে তো আমাদের কেউ না’? এটা কি কোনো রাজনৈতিক দলের মূল্যবোধ? নাকি এটি প্রমাণ করে, দল নয়, আপনারা ব্যক্তি রক্ষায় ব্যস্ত?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অবাক হই না যে আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি আমাকে অস্বীকার করছে। কারণ সত্য বললেই অনেক সময় আপনজনই মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু আমি একটিই প্রশ্ন করতে চাই—যদি আমি আপনাদের কেউ না হয়ে থাকি, তাহলে আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার মাঠের উপস্থিতি এতদিন আপনারা কেন ব্যবহার করেছেন?’
নারীর প্রতিবাদ ও সমাজের প্রতিচ্ছবি
নীলা ইস্রাফিলের এই প্রতিবাদ শুধু তার ব্যক্তিগত নয়, বরং সমাজের প্রতিটি নারীর কণ্ঠস্বর। তিনি বলেন, ‘একজন নারী যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখনই তাকে দলহীন, আশ্রয়হীন প্রমাণ করতে পারাটাই কি রাজনীতির নতুন রীতি? আমি কারো পরিচয়ে নই, আমি আমার ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো একজন মানুষ। আমাকে অস্বীকার করে সত্যকে অস্বীকার করা যাবে না।’
উপসংহার: নৈতিকতার প্রশ্নে রাজনীতি
নীলা ইস্রাফিলের এই সাহসী অবস্থান আমাদের রাজনীতির নৈতিকতা ও নারীর অবস্থান নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। রাজনীতিতে নারীর কণ্ঠকে সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি—এটাই সময়ের দাবি।
বাংলাদেশ নিউজ২৪ এর মতামত: আপনি কি মনে করেন, রাজনীতিতে নারীর কণ্ঠ যথাযথ সম্মান পায়? নীলা ইস্রাফিলের এই প্রতিবাদ কি আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে? আপনার মতামত কমেন্টে জানান।
Nila Israfil resigns from NCP, raising questions about women’s roles and ethics in Bangladeshi politics. Her bold statement sparks national debate.


