US India Tariff Dispute

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের শুল্ক: ৫০% কেন? ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে মোদি সরকারের কড়া জবাব!

আরে বন্ধু, খবরটা শুনেছো? আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলে বেশ তোলপাড় ফেলে দিয়েছে একটা নতুন ঘটনা! সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যের ওপর আরও ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছে। আর এর ফলে ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের মোট শুল্ক গিয়ে দাঁড়িয়েছে ভয়ংকর ৫০ শতাংশে! ভাবা যায়? এই পদক্ষেপকে ভারত রীতিমতো ‘অন্যায়, অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলে কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছে। চলো, পুরো ব্যাপারটা একটু খুঁটিয়ে দেখি, কেন এমনটা হচ্ছে আর এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।

কেন এই অতিরিক্ত শুল্ক?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ করেই ভারতীয় পণ্যের ওপর এই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এর পেছনের কারণটা কী? মূল কারণ হিসেবে হোয়াইট হাউস বলছে, ভারত নাকি রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনছে! এই তেল কেনার ‘জরিমানা’ হিসেবেই ওয়াশিংটন এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। এর আগে থেকেই ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা ছিল, এখন নতুন করে আরও ২৫ শতাংশ যুক্ত হওয়ায় মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে।

এই ধরণের শুল্ক আরোপ একটি দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। সাধারণত বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, দেশীয় শিল্প রক্ষা করা বা ভূ-রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য দেশগুলো এমন পদক্ষেপ নেয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি এবং তার প্রভাব সম্পর্কে জানতে উইকিপিডিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত নিবন্ধটি পড়ে দেখতে পারো।

ভারতের কড়া জবাব: ‘অন্যায়, অন্যায্য ও অযৌক্তিক’

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণার পরপরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অন্যায়, অন্যায্য এবং অযৌক্তিক। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বিবৃতিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে:

  • রাশিয়া থেকে তেল আমদানি: মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে নিশানা করেছে। কিন্তু ভারত এই বিষয়ে তাদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে।
  • বাজার নির্ভরতা ও জ্বালানি নিরাপত্তা: ভারতের আমদানি বাজারের ওপর নির্ভর করে। আর এটি করা হয় মূলত ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। অর্থাৎ, নিজেদের দেশের মানুষের চাহিদা পূরণের জন্যই তারা যেকোনো উৎস থেকে তেল আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছে।
  • জাতীয় স্বার্থ রক্ষা: বিবৃতিতে আক্ষেপ করে বলা হয়েছে, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে যুক্তরাষ্ট্র শুধু ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করছে এমন সব পদক্ষেপের জন্য, যেগুলো আরও বেশ কয়েকটি দেশ নিচ্ছে তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য।’ এর মানে হলো, ভারত যা করছে, তা অনেক দেশই তাদের জাতীয় স্বার্থে করে থাকে, তাহলে শুধু ভারতের ওপর কেন এই ‘শাস্তি’?

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের শুল্ক বিতর্কের ভবিষ্যৎ কী?

এই ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি সীমিত করুক, অন্যদিকে ভারত তার বিশাল জনসংখ্যার জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বিকল্প উৎস খুঁজছে। এই বাণিজ্যিক শুল্ক আরোপের ফলে ভারতীয় পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে, যা তাদের রপ্তানিকে কঠিন করে তুলবে। এর ফলে ভারতের অর্থনীতিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদেরও উচ্চমূল্য দিয়ে ভারতীয় পণ্য কিনতে হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে দুটি দেশের মধ্যে আলোচনা ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হওয়া জরুরি। কারণ এই বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে উভয় দেশের অর্থনীতিতেই এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। আশা করা যায়, উভয় পক্ষই অদূর ভবিষ্যতে এই সমস্যার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করবে।

উপসংহার: যুক্তরাষ্ট্রের এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। ভারত এই পদক্ষেপকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার করেছে। এই শুল্ক আরোপের ঘটনা বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের একটি বড় উদাহরণ। এই ধরনের আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং এর প্রভাব সম্পর্কে আরও জানতে, তুমি আমাদের আন্তর্জাতিক সংবাদ বিভাগ দেখতে পারো।

আপনার কী মনে হয়? যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ কি আসলেই ন্যায্য? ভারত কি সঠিক জবাব দিয়েছে? নিচে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান।

বাংলাদেশ নিউজ২৪ এর মতামত: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এমন বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ প্রায়শই দেখা যায়। তবে, দেশগুলোর উচিত পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করা, যা বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভারতী পণ্যে অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপকে ‘অন্যায়’ বলল ভারত। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জেরে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে মোট শুল্ক দাঁড়াল ৫০%। জানুন বিস্তারিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top