আজ কম খরচে আনন্দ করার দিন

রিপোর্টার :
  • আপডেট সময় : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৪১ সাংবাদটি পড়া হয়েছে

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যদি যেকোনো ক্ষেত্রে চাহিদার চেয়ে বা প্রয়োজনের বেশি কিছু ব্যয় করে ফেলি, তাহলে তা খারাপ। যেকোনো ব্যাপারে যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু খরচ করা উচিত। তাই জীবনে চলার পথে প্রতিটি ব্যাপারে আমাদের মিতব্যয়ী হওয়া উচিত। মিতব্যয়ী শব্দের অর্থ পরিমাণমতো ব্যয় করা। মিতব্যয়ী কিন্তু কৃপণ নয়।

বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, আয় বুঝে ব্যয় করো। আয় বা সম্পদের পরিমিত ব্যয়ের অভ্যাসই মিতব্যয়িতা। মিতব্যয়িতা একটি অসামান্য মানবীয় গুণ। জীবনে যে যত বেশি মিতব্যয়ী, সে তত বেশি দুশ্চিন্তামুক্ত। সুন্দর ও সফল জীবন গঠনের জন্য মিতব্যয়িতার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। মিতব্যয়িতা মানুষকে হিসাবি ও সৎ সাহসী হতে সাহায্য করে। আয় ও সম্পদের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় ব্যতীত কখনোই সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জন করা যায় না।

মানুষ জীবনে যে পেশাই গ্রহণ করুক না কেন, তার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে অর্থ উপার্জন। তবে অর্থ উপার্জনই বড় কথা নয়, অর্থের যথার্থ ব্যয়ের মধ্যেই মানুষের প্রকৃত পরিচয় উন্মোচিত হয়। কিন্তু আমাদের সমাজবাস্তবতাই এমন যে এখানে অর্থ খরচকে আনন্দের সমার্থক বলে ভাবা হয়। ফলে ভালো সময় কাটানোর জন্য অর্থ খরচ করতে হবে, মানুষের মধ্যে এ রকম একটা ধারণা চালু আছে। অথচ মৌলিক সত্যটা কিন্তু একদমই বিপরীত। ব্যাংক হিসাব কিংবা পকেটের ওপর বাড়তি চাপ না দিয়েও নির্মল সুখ পাওয়া সম্ভব। পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করছে, আপনি অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে কতটা চৌকস ও বুদ্ধিদীপ্ত তার ওপর।

দৈনন্দিন জীবনযাপনে কোথায় কতটুকু খরচ করা উচিত, ব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী বাছাই ও ক্রয়ে কতটুকু মিতব্যয়ী হওয়া দরকার, প্রয়োজনীয়তা-অপ্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যথার্থ বিবেচনা-বোধ এসব বিষয়ই মূলত আপনার প্রাত্যহিক আনন্দের সঙ্গে অর্থের সমীকরণ নির্ধারণ করে দেবে। মিতব্যয়িতা মানে কিন্তু কোনোভাবেই কৃপণতা নয়। বরং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে টাকাপয়সার এমন বিবেচনাপ্রসূত ব্যবহার নিশ্চিত করা, যা নিয়ে আসবে সত্যিকারের সুখ ও সমৃদ্ধি।

তবে এই প্রলোভনমুখী বাজারব্যবস্থায় মিতব্যয়ী হওয়াটা সহজ নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের বিলাসী জীবনের চিত্র, বাহারি বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি আমাদের সামনে অপচয়ের রঙিন ফাঁদ পেতে রেখেছে। ফলে ধারদেনা করে হলেও অর্থের বিনিময়ে চাই সুখ। তবুও চেষ্টা করা উচিত অপচয়ের রঙিন ফাঁদ থেকে এড়িয়ে চলা।

আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) মিতব্যয়ী আনন্দ (কম খরচে আনন্দ) দিবস। ১৯৯৯ সালে আমেরিকান লেখক শেল হরোভিৎজ উদ্যোগে দিনটি চালু হয়। অতিরিক্ত অর্থব্যয় না করে জীবন উপভোগ করার ব্যাপারে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে এই দিবসের প্রবর্তন করেন তিনি। তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পরিবেশ সচেতনতাও। পরিবেশ বাঁচাতে প্রাকৃতিক সম্পদের পুনর্ব্যবহার করে যেমন অর্থ বাঁচানো সম্ভব, তেমনই প্রয়োজন মেটানোও সম্ভব।

দিবসটি তাহলে পালন করা যাক। অল্প খরচে কিংবা বিনা খরচে কাটুক একটা আনন্দময় দিন। কম খরচে আনন্দ কীভাবে পাওয়া যেতে পারে, জেনে নিন কিছু আইডিয়া।

ঘরোয়া আয়োজনে রান্নাবান্না করতে পারেন।
মুক্ত প্রকৃতিতে বেরিয়ে পড়ুন।
পার্কে হাঁটহাঁটি করে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারেন।
সামাজিক কার্যক্রম কিংবা স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমেও পেতে পারেন নির্মল আনন্দ। এবার নিজের মতো করে আরও কিছু ভাবুন যা করলে আপনি আনন্দ পাবেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যরা যা পছন্দ করছে
© All rights reserved © 2024 bdnews24us.com