নিজস্ব প্রতিবেদক: সয়াবিনের ব্যবহারে আরও কিছু দিক রয়েছে যা মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে প্রভাব ফেলতে পারে। সয়াবিনে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকায় এটি একটি ভালো বিকল্প হিসেবে কাজ করে, বিশেষ করে মাংস বা দুগ্ধজাত খাবারের বিকল্প হিসেবে। তবে, এটি প্রক্রিয়াজাত খাবার হওয়ায় বেশ কিছু পুষ্টিবিদ এটি নিয়মিত খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দেন।
যারা নিরামিষভোজী বা ভেগান, তারা সয়াবিনকে তাঁদের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন। সয়াবিনের মধ্যে উচ্চমাত্রার প্রোটিন থাকায় এটি অনেকের জন্য শক্তি বৃদ্ধির একটি উৎকৃষ্ট উৎস। তবে, এর অতিরিক্ত ব্যবহারে হরমোনাল সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সয়াবিনের ফাইটোওয়েস্ট্রোজেন পুরুষদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মতো হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে পারে, যা তাদের টেস্টোস্টেরনের প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে। এই কারণে, বিশেষজ্ঞরা পুরুষদের জন্য সয়াবিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দেন।
এছাড়া, সয়াবিনের অতিরিক্ত ব্যবহারে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যা হতে পারে, যেমন পেট ফেঁপে যাওয়া, ডায়েরিয়া বা গ্যাসের সমস্যা। কিছু মানুষ সয়াবিনে থাকা পেশিক উদ্দীপক প্রোটিনের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে থাকতে পারে, যা তাদের পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে, সয়াবিনের ব্যবহার সীমিত করতে এবং সঠিক পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এদিকে, সয়াবিনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর প্রক্রিয়াজাতকরণের পদ্ধতি। বেশিরভাগ সয়াবিন সয়া চাঙ্ক বা সয়া প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয় যা উচ্চতর প্রক্রিয়াজাত হয়, এবং এই প্রক্রিয়া কিছুটা পুষ্টির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তবে, যদি সয়া প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক এবং অপ্রক্রিয়াজাত সংস্করণ গ্রহণ করা যায়, তবে এর পুষ্টিগুণ আরও বেশি পাওয়া যেতে পারে।
একদিকে, সয়াবিনের স্বাস্থ্যকর গুণাবলী এবং পুষ্টিগুণ অনেকের জন্য অত্যন্ত উপকারী, তবে অন্যদিকে এর অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে শরীরে হরমোনাল ও শারীরিক সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে, সয়াবিন খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকা এবং সুস্থ, প্রাকৃতিক খাবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া সবচেয়ে উপকারী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সয়াবিন খাওয়ার আগে নিজের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত, যাতে এর সুফল পাওয়া যায়, কিন্তু ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয়।
হানিফ/