রাতের রাণী নাইট কুইন এক সময় খুব বিরল ফুল ছিল। কোনো বাসায় যদি একটা ফুলও ফুটতো, টেলিভিশন আর সংবাদপত্রে প্রচার হতো। খুব লোভ হতো একটু দেখার। কিন্তু উনি যে ফোটেন মধ্যরাতে। গত প্রায় ১০/১২ বছর যাবত এই ফুল আমাদের বাসার ছাদেই ফোটেন, বাড়িওয়ালার টবের গাছে। সেই একটা গাছ থেকে এখন আমরা অনেকগুলো চারা বানিয়েছি। কি ধবধবে সাদা ফুল! রেণুগুলো হলুদ। বাতাসে তিরতির করে নড়ে। আর যখনি ফুল ফোটে, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ে।
এখন এরচেয়ে বিস্ময়কর লাগে ড্রাগন ফুল! নাইট কুইনের চেয়ে আরো বড়, ড্রাগনের মতই ভয়ংকর লাগে আমার কাছে! উনিও মধ্যরাতেই ফোটেন। সবকিছুই নাইট কুইনের মত, শুধু আকারে তার ৩ গুণ বড়! করোনার সময় আরেক ফ্ল্যাটের বাসিন্দা লুৎফা বেগম ৩ টি বড় ড্রামে গাছগুলো লাগান। বছর ঘুরতেই ফুল ফুটতে শুরু করলো। যথারীতি আবার আমরা উৎসব করেই ছাদে গেলাম ফুল দেখতে, রাত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত নয়ন ভরে দেখলাম তাকে। তবে প্রথমে তার বিশালাকার দেখে সত্যি খুব ভয় পেয়েছিলাম। কাছে যেতে সাহস করতে পারছিলাম না।
এত সুন্দর শুভ্র-সাদা ফুলটি অনেক বড় হওয়ায় খুব ভয়ংকর লাগছিল আমার। তবে সত্যি সে অপরূপ সুন্দর। কলি থেকে ফুল ফোটার প্রতিটি ধাপই খুব আকর্ষণীয়। একসাথে যখন ১০/১২ টি ফুল ফোটে, তখন মনে হয় ফুলের মেলা বসেছে। মিষ্টি একটা ঘ্রাণে চারপাশটা মৌ মৌ করে!
ড্রাগন ফল দেখতে কেমন: ফলটি খাঁজকাটা হয়। কাঁচা ড্রাগন সবুজ আর পাকা ড্রাগন ম্যাজেন্টা রঙের হয়। তবে ভিতরটা সাদা আর ম্যাজেন্টা দুই রঙের হয়। স্বাদে মিষ্টি। আমাদের দেশেও এখন বাণিজ্যিক ভাবে ড্রাগন চাষ হচ্ছে।
ড্রাগনের উপকারিতা: ড্রাগন ফল খুব পুষ্টিকর। এর মধ্যে যে ছোট ছোট বিচিগুলো আছে, তাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন ‘বি’। এছাড়াও ড্রাগনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আর ফাইবার। শরীরের কোলনের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস ইত্যাদির জন্য ফাইবার অনেক বেশি দরকারী। এতে প্রচুর আঁশ থাকায় রক্তের চর্বি কমায়, হজমে সাহায্য করে, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। ড্রাগন অন্যান্য ফলের মতো কেটে, জুস করে অথবা সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন।