বিশ্ব ফুটবল জগতের আলোচিত নাম সাদিও মানে। তিনি লিভারপুলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেমন খ্যাতি অর্জন করেছেন, তেমনি মাঠের বাইরের জীবনেও মানবতার সেবায় অবদান রাখছেন। গড়ে তোলা সাফল্য, অর্থ এবং খ্যাতির মাঝেও তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল নিজ জন্মভূমি সেনেগালের পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলোর উন্নতি। নিজের বিলাসিতা ত্যাগ করে তিনি গ্রামবাসীদের কল্যাণে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
ফুটবল ক্যারিয়ারে জয়, আলো, সম্মান ও সম্পত্তি পাওয়া সাদিও মানে কখনোই নিজের জীবন বিলাসিতায় কাটাননি। বরং তিনি তার আয়ের বড় একটি অংশ গ্রাম ও দেশের মানুষের জন্য ব্যয় করেন। মাঠের বাইরে তিনি সবসময়েই সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। তার গ্রামে হাসপাতাল, স্কুল, পোস্ট অফিস, পেট্রোল স্টেশনসহ ৪-জি ইন্টারনেট সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন, যা গ্রামবাসীর জন্য ব্যাপক সুফল বয়ে এনেছে।
বাম্বালি গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মাধ্যমিক স্কুল নির্মাণ করেছেন, যার জন্য তিনি আড়াই লাখ পাউন্ড (প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা) খরচ করেছেন। গ্রামবাসীদের সুবিধার জন্য পোস্ট অফিস, পেট্রোল পাম্প, এবং একাধিক সামাজিক উদ্যোগ চালু করেছেন। তার উদ্যোগে, গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে মাসিক ৭০ ডলার (প্রায় ৬ হাজার ৩০০ টাকা) করে সহায়তা প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে, যা তাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করেছে।
এছাড়াও, আফ্রিকার শিশুদের ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহ জন্মানোর জন্য তিনি বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। লিভারপুলে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলার আগে তার গ্রামের প্রায় ৩০০টি জার্সি উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। তার এই মানবিক উদ্যোগগুলো গ্রামবাসীদের জীবনকে আলোকিত করেছে।
মানবিক গুণাবলির জন্য তিনি নিজেকে কখনোই বিলাসিতায় পরিপূর্ণ করেননি। বরং তিনি নিজের প্রচুর আয় সঠিকভাবে বিনিয়োগ করেছেন। দামি গাড়ি, বাড়ি বা বিলাসবহুল জীবনযাপনের পরিবর্তে, অসংখ্য দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করা তার প্রাধান্য। তিনি নিজের জিন্দেগির লক্ষ্য বদলে দিয়েছেন, যেখানে তার সবচেয়ে বড় সুখ হল মানুষের উন্নতি ও কল্যাণ।
এটা স্পষ্ট, সাদিও মানে শুধু একজন ফুটবলার নয়, একজন সমাজসেবক, মানবিক নেতা, এবং নিজের দেশ ও গ্রামের প্রতি এক বিশ্বস্ত সন্তানের প্রতীক।