আজ পবিত্র শবে বরাত। সারা দেশে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে এ মহিমান্বিত রাত পালিত হবে। মুসলমানরা এই রাতে আল্লাহর কাছে পাপের ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং মুক্তির জন্য দু’হাত তুলে প্রার্থনা করেন।
শবে বরাত শব্দটি মূলত ফারসি ভাষার। ‘শব’ মানে রাত এবং ‘বারাআত’ মানে মুক্তি বা নাজাত। অনেকেই একে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামে উল্লেখ করেন। তবে হাদিস শরিফে এই রাতকে ‘নিসফে শা’বান’, অর্থাৎ শা’বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে শবে বরাত সম্পর্কে
কোরআনে এসেছে— “নিশ্চয়ই আমি এক বরকতময় রাতে এই কিতাব নাজিল করেছি; এতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়।” (সুরা দুখান: ১-৫)
তাফসিরবিদদের মতে, এখানে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রাত বলতে শবে বরাতকেই বোঝানো হয়েছে।
হাদিসে শবে বরাতের গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— “অর্ধ শা’বানের রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সৃষ্টি জগতের দিকে দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেন।” (ইবনে মাজাহ: ১৩৯০)
হজরত আয়শা (রা.) বলেন— “এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) এত দীর্ঘ সিজদা করলেন যে আমি ভাবলাম তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে তিনি বললেন, ‘এই রাতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, গুনাহগারদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন এবং বিদ্বেষপোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।’” (শুআবুল ইমান)
শবে বরাতের আমল ও বিশেষ আয়োজন
এই রাতে মুসলমানরা নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, ইস্তেগফার, জিকির-আসকার ও দোয়ায় মশগুল থাকেন। বাংলাদেশে এ উপলক্ষে মসজিদে ওয়াজ মাহফিল, দোয়া অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য ধর্মীয় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এদিন সরকারি ছুটি থাকে এবং টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে বিশেষ আয়োজন প্রচারিত হয়।
শবে বরাত আমাদের জন্য তওবা, ইবাদত ও আত্মশুদ্ধির এক অনন্য সুযোগ। আসুন, আমরা সবাই এ রাতের ফজিলত অর্জনের চেষ্টা করি।