পাইলস থেকে রক্ষা পাবেন যেভাবে

রিপোর্টার :
  • আপডেট সময় : বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৭০ সাংবাদটি পড়া হয়েছে

গোপনে বাড়তে থাকে অর্শ বা পাইলস। আর জানার পর সেটি চেপে রাখলে ব্যথা শুরু হয়, সঙ্গে রক্তপাত। এটি মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। পাইলস বা অর্শ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বর্তমানে অনেক রকম চিকিৎসায় এই অসুখ থেকে মুক্তি সম্ভব। সে বিষয়েই আজকের প্রতিবেদন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
সকালের প্রাতঃক্রিয়া যতটা শান্তির ঠিক ততটাই অশান্তির হয়ে ওঠে যদি পাইলস থাকে।

এটা এমনই একটা অসুখ যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব চলতে থাকে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ফলে বর্তমানে পাইলস নিয়ে ততটাও চিন্তা নেই। কারণ এখন এই কষ্ট নানাভাবে লাঘব করা সম্ভব হচ্ছে।

পাইলস কখন হয়

অর্শ বা পাইলসের সঙ্গে যুক্ত শিরাগুলো মলদ্বার বা রেক্টামে সাধারণতভাবে থাকেই। কিন্তু যখন এগুলো ফুলে ওঠে তখন সেটাকে আমরা পাইলস বা অর্শ বলি। পাইলস সাধারণত দু ধরনের হয়ে থাকে। ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল পাইলস। পাইলসের চারটি পর্যায় রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় অর্শ ভিতরেই থাকে, বেরিয়ে আসে না।

দ্বিতীয় পর্যায়ে শুধু মলত্যাগের সময় ফুলে ওঠা শিরা বেরিয়ে আসে। তারপর আবার নিজে নিজে ভেতরে ঢুকে যায়। তৃতীয় পর্যায়ে পাইলস বাইরে বেরিয়ে আসে, কিন্তু রোগী হাত দিতে তা ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে। চতুর্থ পর্যায়ে পাইলস মারাত্মক পর্যায়ে যায়। রেকটাম থেকে তো বেরিয়ে বাইরে আসেই, কিন্তু কোনোভাবেই তা ভেতরে যায় না।

কিভাবে বুঝবেন আপনার পাইলস হচ্ছে?

এই অসুখে সর্বপ্রথম মলত্যাগের সময় মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হয়। তারপরে হতে পারে মলদ্বারে চুলকানি। পাইলসের জন্য রেক্টামে ফুলে ওঠা শিরা বা ধমনিতে থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বেঁধে গেলে তা থেকে খুব যন্ত্রণা হতে পারে।

কাদের ঝুঁকি বেশি

সাধারণত যারা দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন।
যারা খুব মোটা বা মেদবহুল।
যাদের ডায়েটে ফাইবার কম থাকে।
এছাড়া গঠনগত কিছু সমস্যা থেকে পাইলসের প্রবণতা দেখা দেয়। যেমন শিরার মধ্যে ভালভ থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে রেকটামের শিরায় সেই ভালভ উপস্থিত থাকে না। ফলে শিরাগুলো আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফুলে যেতে থাকে। তা থেকে অর্শ হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ পায়।

অনুকরনীয় বিষয়

বেশি করে পানি খেতে হবে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
বড় গামলায় অল্প উষ্ণ পানি নিয়ে তাতে এপসম সল্ট ফেলে বা অ্যান্টিসেপটিক কোনো লোশন পানিতে মিশিয়ে তার ওপর বসে ‘সিটস বাথ’ নিতে হবে। রোজ ১০ মিনিট করে করতে হবে।
যাদের মলত্যাগের সময় খুব ব্যথা হয় তাদের জন্য বিভিন্ন ওষুধও রয়েছে। যেগুলো লাগালে এই ব্যথার কষ্ট অনেকটাই প্রতিহত করা সম্ভব। কিছু খাবার ওষুধও রয়েছে তার দ্বারাও চিকিৎসা করা হয়।
আরো পড়ুন
যেভাবে খাওয়ালে কাঁদবে না শিশু
যেভাবে খাওয়ালে কাঁদবে না শিশু

ওষুধে কাজ না হলে রয়েছে নানা চিকিৎসা

ব্যথা বা রক্তপাত বাড়তে থাকলে কিংবা পুনরায় যদি সমস্যা ফিরে আসে তাহলে কোলনোস্কোপি করে রোগ কতটা বিস্তৃত হয়েছে সেটা দেখা হয় এবং চিকিৎসাও করা হয়।

সাধারণত ব্যান্ডিং করে অর্শ নির্মূলের চেষ্টা করা হয়। এক্ষেত্রে অর্শের শিরাকে বিশেষ মেডিকেটেড রবার ব্যান্ড পরিয়ে রেখে দেওয়া হয়। ফলে শিরায় ধীরে ধীরে রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে শিরা অকেজো হয়ে যায়। কষ্ট লাঘব হয়, অর্শ ধীরে ধীরে সেরেও যায়। এটা কোলনোস্কোপি পদ্ধতিতে করা হয়।

এই পদ্ধতিতে আরো একটি চিকিৎসা করা হয়, যার নাম স্ক্লেরোথেরাপি। এক্ষেত্রে ফুলে যাওয়া শিরায় এক ধরনের ক্যমিক্যাল কোলনোস্কোপির দ্বারা ইনজেকট করে দেওয়া হয়। ফলে ফুলে যাওয়া শিরা শুকিয়ে খসে পড়ে যায়।

শল্যচিকিৎসায় লেজারের গুরুত্ব

সাধারণত পাইলসের চিকিৎসায় হেমারয়েড এক্টোমি করে অপারেশন করা হয়। অর্থাৎ অর্শ বা হেমারয়েডকে কেটে বাদ দেওয়া হয়।
হেমারয়েডপেক্সি পদ্ধতিতে হেমারয়েডের ফুলে যাওয়া অংশ বিশেষ মেডিকেটেড স্টেপলার দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। তারপর ধীরে ধীরে অর্শ খসে পড়ে যায়।

বর্তমানে এই সমস্যায় সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে লেজার ট্রিটমেন্ট। এতে সুবিধাও অনেক। এই চিকিৎসা করতে গিয়ে একদম অল্প কেটে চিকিৎসা করা যায়। রোগী খুব অল্প সময় হাসপাতালে ভর্তি থেকেই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারেন। লেজারে ব্যথা, যন্ত্রণাও একদম কম হয়। এই চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও খুব কম।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যরা যা পছন্দ করছে
© All rights reserved © 2024 bdnews24us.com